আজ || শুক্রবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩
শিরোনাম :
  তালায় উন্নয়ন কার্যক্রমে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্তি বিষয়ক মতবিনিময় সভা       উত্তরণের আয়োজনে সম্পৃক্তকরণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত       তালায় ৮ দলীয় নকআউট ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত       শ্যামনগরে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম নিরসন প্রকল্পের মুক্ত আলোচনা       সাতক্ষীরার চারটি সংসদীয় আসনে ৩৭ জনের মধ্যে একজনের মনোনয়ন পত্র বাতিল, বাকী ৩৬টি বৈধ ঘোষণা       তালার খলিলনগরে মানব পাচার প্রতিরোধ কমিটির সভা       সাতক্ষীরার সংসদীয় আসনের ২৩ প্রার্থীর মনোনয়পত্র যাচাই বাছাই শেষে একটি বাতিল ঘোষণা       বর্জ্য পরিবহনের জন্য সাতক্ষীরা পৌরসভায় ৬টি ভ্যান হস্তান্তর       তালায় আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস পালিত       বিএনপি জামায়াতের নৈরাজ্য রুখতে যুবলীগ’ই যথেষ্ট-ফিরোজ আহমেদ স্বপন    
 


ঢ্যাড়ার আধুনিক সংস্করণ মাইকিং!!

গাজী মোমিন উদ্দীন::

ছোট বেলায় বাজারে ঢ্যাড়া দিতে দেখেছি। একজন মানুষ, আবার যে সম্মান ও মর্যাদার দিক দিয়ে তলানিতে মনে (!) হতো, তাকে দিয়ে ঢ্যাড়া দেওয়ার কাজটি করা হতো৷ সে একটি টিন ও একটি লাঠি নিতো৷ বাজাতো আর লোক জড়ো হলে নির্ধারিত ঘোষণাটি দিতো।

আমি ছিলাম অজপাড়াগাঁয়। সেখানে বেশিরভাগ ঢ্যাড়ার বিষয় ছিল গরু জবাই। এরপর ছিল ইউপিতে চাল দেয়া। ইউপি তো নয়, কন্ট্রোল। বলা হতো কন্ট্রোলে চাল দেয়া হবে।

গরু-ছাগলের জেল খোয়াড়ের ঘোষণাও দেয়া হতো। এখন এই সিস্টেম আছে কিনা জানিনা, তবে চোখে পড়ে না। এছাড়া বিশেষ কোন খবর লোকজনকে জানাতে গেলেও ঢ্যাড়ার বেশ ব্যবহার ছিল। ইচ্ছে মত যখন তখন যত্রতত্র মাইকিং চলছে। ফলে ঢ্যাড়া বেঁচে আছে এখনও। তবে আগের টিন পিটিয়ে ঢ্যাড়া কারো জন্য খুব ক্ষতিকর ছিল না। এখনকার ঢ্যাড়ার যন্ত্রণায় অস্থির।

বিশেষ করে রাস্তার ধারে যাদের বাসাবাড়ি, তাদের অবস্থা নাকাল। শহরে এটি রীতিমতো নিত্য জীবনের সত্য বিরক্তি। বেশিরভাগ মাইকিং এখনও গরু ও মহিষ জবাই, ডাক্তারের রোগী দেখা, পোল্ট্রি মুরগির দাম কমে যাওয়ার খবর।

বিশাল একটি এড়ে গরু জবাই হবে কিংবা বিশাল একটা এড়ে মহিষ জবাই হবে, এখবর শুনতে শুনতে অভ্যস্ত শহরের মানুষ৷ পোল্ট্রি মুরগির দাম কমার খবরে খুশির চেয়ে বিরক্ত হওয়ার পরিমাণ বেশি মনে হয়।

আর ঢাকা কিংবা খুলনা নয়, আপনার শহরেই উন্নত চিকিৎসার সুযোগ, আরও কত কী প্রচারণায় শহর রীতিমতো মাইকিং এর শহরে পরিণত।

শব্দদূষণ প্রতিরোধ ও পরিবেশ দুষণ নিয়ন্ত্রণে করণীয় শীর্ষক অনেক সেমিনার ও সভায় গিয়ে বক্তব্যের সুযোগে কতবার বলেছি এসব। পরিবেশ দিবস পালনে ৫ জুন কত কথাই হয়, সে সব ৫ জুনে সীমাবদ্ধ থকে।

এই আধুনিক ঢ্যাড়ার প্যাড়ায় অস্থির মানুষের জন্য কোন পথ খোলা আছে কিনা জানিনা, তবে সচেতন হওয়ার বিকল্প নেই। যত্রতত্র মাইকিং আইন বিরুদ্ধ কিনা, মাইকিং এর জন্য প্রশাসনের পূর্বানুমতি নেয়ার বিধান আছে কিনা, এসব বিষয়ে সচেতন হওয়া বাঞ্চনীয়।

রাস্তার ধারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, ক্লিনিক, অন্যান্য সেবামূলক প্রতিষ্ঠান বেশি। সেই রাস্তা দিয়ে প্রতিনিয়ত চলে অসহ্য মাইকিং। আমরা যারা সচেতন মানুষ, তাদের এগিয়ে আসা উচিৎ বলে মনে করি।

সামাজিক আন্দোলন করেন যারা, সমাজ নিয়ে ভাবেন যারা, সুন্দর ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ চান যারা, প্রকৃতি নিয়ে চিন্তা করেন যারা, এই সমাজ, রাষ্ট্র নিয়ে ভাবেন যারা, তাদের আরও একটি কাজের জন্য এগিয়ে আসা প্রয়োজন। যাতে যত্রতত্র মাইকিং তথা শব্দদূষণ প্রতিরোধ করা যায় সে লক্ষ্য পুরণে সামাজিক নিরাপত্তা বলয় সৃষ্টি হয়।

আগামীর বাংলাদেশে প্রাণভরে শ্বাস নিতে, নির্বিঘ্ন থাকতে অপ্রয়োজনীয় এসব প্যাড়া থেকে বাঁচতে এগিয়ে আসার বিকল্প নেই।

এখনও ঢ্যাড়া আছে। এর আধুনিক সংস্করণ হল মাইকিং। আগে বাজার ও হাটে রাতে ঢ্যাড়ার ব্যবস্থা থাকলেও এখন মাইকিং এর জন্য নির্ধারিত সময় নেই।


Top