ভাদ্র মাসে,রোদ্র মাঝে কে দিল নীল আকাশে শিমুল তুলা উড়িয়ে?
সোনালি আঁশে ভরা তরী বেয়ে, মাঝি ভিড়ায় যখন তরী কূলেতে এসে,
তা দেখে আইল বেয়ে মাঝি বৌ আসে দৌড়ে।
আঁচলা খুলে ঘার্মাক্ত মুখ দেয়,পরম সোহাগ দিয়ে মুছে।
লজ্বা পেয়ে স্নিগ্ধ অনিলে শুভ্র মেঘ যায় হাওয়াই মিঠায়ের ন্যায় মুখ লুকিয়ে।
গোধূলির আদুরে আভায় নব বধুরা লাজ রাঙা মুখে, কাঁখে নেয় প্রবাহিনীর মুক্ত কণা তুলে।
পক্ষী ফেরার ক্ষণে বেণীর মাঝে পুষ্প গুজে, রমণীরা ফেরে নীড়ে ভূবন ভুলিয়ে হেঁসে।
বেণীদ্বয় ওঠে কুমড়ো ডগার মতো নেচে নেচে। রানার ঠনঠনিয়ে আসবে বলে রমণীরা চিঠি লেখে অতি সন্তপর্ণে।
অঙ্গনা মন বোঝা বড্ড দায়। সর্ব ভুলে নন্দিনী শাড়ি পরে রেশমি চূড়ি ঠনঠনিয়ে,চিকুর বাতাসে উড়িয়ে, তাতে বনফুল গুজে প্রবাহিনীর তীরে যায় ছুটে মাঠ-তেপান্তর ছাড়িয়ে।
কখনোবা দেখা যায় মৃগটানা চোখ ছাপিয়ে শ্রাবণের ধারা বহে।
তরঙ্গিনীর বুকে কত নাও যায় আসে। পাল তোলা নাও স্রোতে ইলিশ ধরে।
কোনো কোনো তরীর পাটায় আবার রান্নার ধোঁয়া ওঠে।
কিশোর-কিশোরীরা যান্ত্রিকতা ভূলে প্রবাহিনীর তরে দেয় গা ভাঁসিয়ে।
আঁধারের অপেক্ষাতে জোনাকি কৌটায় ভরে ভাবনা নিয়ে আছি বসে চিঠি লিখবো সারা রাত্রি সেই আলোতে।
স্বাক্ষী থাকবে লক্ষ তাঁরা মাথার উপরে।
রঙিন মেঘের দেশে, নীল খামে চিঠি দিব ফানুসে বেঁধে।
কুন্তলরাশি কোমল বাতাসের বুকে লিখে লতার দোলনায় সুগন্ধী পুষ্প গুঁজে চন্দ্রিমার নিশিতে চঞ্চলাবর্তীরা দোলে।
স্ফুরণে খিলখিলিয়ে হাঁসে ধরণীর তরে।
বাংলার মনমাতানো কত দৃশ্য চোখের কোণে ভাসে।
সর্ব ভুলে এ মন বলে রয়ে যায় এই সবুজ-শ্যামলে ঘেরা ধরণীর বুকে অনন্তকাল ধরে।।